তাজা খবর: |
Tuesday, 15 October, 2024, at 8:08 AM | ENGLISH |
|
সারাদেশরাজশাহীতে পা হারানো সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাসুদকে পিটিয়ে হত্যানিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশ :
08 সেপ্টেম্বর 2024, রবিবার,
সময় :
17:19,
পঠিত 327 বার
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আবদুল্লাহ আল মাসুদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়–সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারে তাঁর ওপর হামলা হয়। পরে তাঁকে গুরুতর আহত অবস্থায় থানায় সোপর্দ করা হয়। এরপর হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত সাড়ে ১২টার দিকে তিনি মারা যান। নগরের বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাসুদ পারভেজ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে রাতে বিনোদপুর বাজারে মাসুদের ওপর হামলা হয়। পরে একদল শিক্ষার্থী তাঁকে প্রথমে মতিহার থানায় নিয়ে যান। কিন্তু মতিহার থানায় ৫ আগস্টের সহিংসতার কোনো মামলা নেই। তাই তাঁকে বোয়ালিয়া থানায় আনা হয়, যেন তাঁকে কোনো সহিংসতার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ওসি বলেন, গণপিটুনিতে গুরুতর আহত হয়েছিলেন মাসুদ। তাঁর শারীরিক অবস্থা দেখে সেনাবাহিনীর সহায়তায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। এখন পরিবার চাইলে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মাসুদের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মুখপাত্র শংকর কুমার বিশ্বাস। তিনি বলেন, কী কারণে মাসুদ মারা গেছেন, সেটি ময়নাতদন্তের পর বলা যাবে। আবদুল্লাহ আল মাসুদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য। তিনি নগরের বুধপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন। ২০১৪ সালের ২৯ এপ্রিল সকালে ক্লাসে যাওয়ার পথে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া হলের সামনে হামলার শিকার হন আবদুল্লাহ আল মাসুদ। এ সময় মাসুদের ডান পায়ের নিচের অংশ গোড়ালি থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়। বাঁ পা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কেটে দেওয়া হয়েছিল তাঁর হাতের রগ। ওই হামলায় পা হারিয়ে মাসুদ একটি প্লাস্টিকের পা লাগিয়ে চলাচল করতেন। তাঁর অন্য পা শনিবার রাতে ভেঙে দেওয়া হয়। মাসুদকে আহত অবস্থায় বোয়ালিয়া থানায় আনার পরে তাঁর কথাবার্তার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বোয়ালিয়া থানা-হাজতে শুয়ে থাকা অবস্থায় মাসুদকে বলতে দেখা যায়, ‘আমি বিনোদপুরে ওষুধ নিতে এসেছিলাম ভাই। আমি ছাত্রলীগ করতাম ওই জন্য ধরেছে। কিন্তু আমার পা ২০১৪ সালে কেটেছে ভাই। রগটগ সব কাটা ভাই। আমি তো অনেক দিন আগে থেকেই ছাত্রলীগ করা বাদ দিয়েছি ভাই। মাসুদকে যখন আনা হয়, তখন বোয়ালিয়া থানায় ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার। ৫ আগস্ট এক ছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে দুই যুবককে ধরে থানায় এনেছিলেন তিনি। থানায় তিনিও মাসুদকে দেখেন। মাসুদের মৃত্যুর ব্যাপারে জানতে চাইলে আজ রোববার সকালে সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন বলেন, ‘আমরা যে দুজনকে নিয়ে গিয়েছিলাম, তাঁদের নিয়েই ব্যস্ত ছিলাম। তার মধ্যেই আহত অবস্থায় একজনকে আনতে দেখলাম। কিন্তু কারা তাঁকে এনেছিল, তা চিনতে পারিনি। শুধু শুনলাম ছাত্রলীগের কর্মী ধরা পড়েছে, বিভিন্ন জায়গায় যে রকম ধরা পড়ছে।’ তিনি আরও বলেন, এরপর কেউ যাতে না মারে, সে জন্য সালাহউদ্দিন মাসুদকে ভেতরে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। এ ছাড়া তিনি আর কিছুই জানেন না। ওই ব্যক্তি যে মাসুদ ছিলেন, এটাও তিনি জানতেন না তখন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন বেকার থাকার পর নিজের দুর্দশার কথা জানিয়ে একটি চাকরি চেয়ে ২০২২ সালের শেষ দিকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চিঠি লেখেন আবদুল্লাহ আল মাসুদ। এরপর ওই বছরের ৬ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৭ মীর তাফেয়া সিদ্দিকা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে পাঠানো চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার পদে আবদুল্লাহ আল মাসুদকে নিয়োগ দিতে বলেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ২০ ডিসেম্বর আবদুল্লাহ আল মাসুদকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে স্টোর অফিসার পদে নিয়োগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নিয়োগপত্র পেয়ে ২২ ডিসেম্বর চাকরিতে যোগ দেন তিনি। সেই থেকে তিনি এ পদেই চাকরি করতেন। ৩ সেপ্টেম্বর মেয়ের বাবা হন মাসুদ। শনিবার নবজাতক শিশুর ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে মাসুদ লেখেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ তাআলার। গত ৩–৯–২০২৪ তারিখে কন্যাসন্তানের পিতা হয়েছি। মহান আল্লাহ তাআলার কাছে নেক হায়াত ও সুস্থতা কামনা করি। সব আত্মীয়স্বজন, শুভাকাঙ্ক্ষী ও বন্ধুবান্ধবের কাছে আমার ও আমার মেয়ের জন্য দোয়া প্রার্থনা করছি।
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ পাতার আরও খবর
|
সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
|
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জিটুসম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : প্ল্যানার্স টাওয়ার, ১০তলা, ১৩/এ বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, বাংলামটর, শাহবাগ, ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।
|